Wellcome to National Portal
মেনু নির্বাচন করুন
Main Comtent Skiped

ভূমি রেজিষ্ট্রেশ এর তথ্য

ভূমি রেজিষ্ট্রেশন

সম্পত্তি ক্রয়-বিক্রয়কে স্থায়ী করেরাখবার একটি চমৎকার উপায় হইতেছে রেজিষ্ট্রেশন আইন। সম্পত্তি ক্রয়-বিক্রয়মৌখিকভাবে হতে পারে। আবার লিখিত দলিল দ্বারাও হতে পারে। কিন্তু মৌখিকভাবেক্রয়-বিক্রয়ের বিপদ অনেক। প্রতারিত হবার সম্ভাবনা বেশি থাকে। সময়ের সাথেসাথে সম্পত্তির মূল্য বৃদ্ধি পায়। ফলে অনেকেই লোভ সম্বরণ করতে না পেরে ছলেবলে এবং কৌশলে কি করে অন্যের সম্পত্তি আত্মসাত করা যায় তার প্রচেষ্টাচালায়। যিনি সম্পত্তি বিক্রয় করেন তিনি লোভের বশবর্তী হয়ে বিক্রয়টিঅস্বীকার করিতে পারেন বা সম্পূর্ণ বিক্রয় মূল্য পান নাই বলে আপত্তিউপস্থাপন করতে পারেন। কাজেই দেখা যাচ্ছে সম্পত্তি মৌখিকভাবে ক্রয়-বিক্রয়েরবিপদ অনেক। কিন্তু লিখিত দলিল দ্বারা সম্পত্তি ক্রয়-বিক্রয় করলে বিপদ অনেককম থাকে। এমনকি প্রতারিত হবার সম্ভাবনাও কম থাকে। কেননা লিখিত দলিল মৌখিকদাবীর চাইতে মূল্যবান এবং অনেক বেশি প্রাধান্য পায়। লিখিত দলিল থাকলেমিথ্যা দাবী তুলে ক্রয়-বিক্রয় অস্বীকার করিয়া সুবিধা করা যায় না। কিন্তুলিখিত দলিল কি সব সময় নিরাপদ? না তাও নয়। কেননা লিখিত দলিল দ্বারাওপ্রতারণার সম্ভাবনা থাকে। দলিল লিখিয়া তাহা দশ পনের বৎসর পূর্বে সম্পাদিতহয়েছিল। কাজেই দেখা যাচ্ছে যে সম্পত্তি ক্রয়-বিক্রয় লিখিত দলিল দ্বারা হলেইযে বিপদের আশংকা থাকে না, তা নয়। এই আশংকা দূর করবার বিধান রেজিষ্ট্রেশনআইনে দেওয়া হয়েছে। যাহাতে লিখিত দলিলের পিছনের তারিখ দিয়া দলিল রেজিষ্ট্রিকরে নেওয়া সম্ভব না হয়। কারণ এই আইনে দলিল সম্পাদনের চার মানের মধ্যেইরেজিষ্ট্রির জন্য দলিল দাখিল করার বিধান দেওয়া হয়েছে। লিখিত দলিল হারিয়েযাইতে পারে, নষ্ট হয়ে যেতে পারে, অপাঠ্য বা অস্পষ্ট হয়ে পড়িতে পারে। কিন্তুদলিলখানি যদি রেজিষ্ট্রি হইয়া থাকে তা হলে সহজেই ঐ দলিলের নকল নেওয়া যেতেপারে। রেজিষ্ট্রেশন আইনের বলেই তা সম্ভব হয়েছে। বহু বৎসরের অতিকভজ্ঞতার ফসলএই রেজিষ্ট্রেশন আইন। ডোমার উপজেলা থেকে চিলাহাটির দুরত্ব ২০ কিঃমিঃ। ফলেদুরত্ব বিবেচনা করে চিলাহাটিতে একটি সাব রেজিষ্ট্রি অফিস রয়েছে যেখানেসপ্তাহে ৪ দিন জমি রেজিষ্ট্রেশন করা হয়। ডোমার উপজেলায় মোট ২ টি সাবরেজিষ্ট্রি অফিস রয়েছে। রেজিষ্ট্রেশনের ফি নিম্নে উলেস্নখ করা হলোঃ

 

রেজিষ্ট্রেশন আইনের প্রকৃতি

রেজিষ্ট্রেশন আইনের উদ্দেশ্য

রেজিষ্ট্রেশন আইনের ক্রম বিকাশ

রেজিস্ট্রেশন প্রশাসন

বিভিন্ন প্রকার দলিল

রেজিষ্ট্রি দলিলের আবশ্যকীয় শর্তাবলী

 

 

রেজিষ্ট্রেশন আইনের প্রকৃতিঃ

জেরিমি বেনথামের মতে সাবস্টেন্টিভঅথবা এ্যাডজেকটিভ ধরণের হইবে। প্রথমটি হচ্ছে মূল আইন এবং দ্বিতীয়টি হচ্ছেপ্রথমটিকে বাস্তবায়ন করিবার পদ্ধতিগত আইন, দ্বিতীয়টি আদালত পরিচালনারপদ্ধতি, পক্ষগণের উপর সমন জারীর পদ্ধতি, সাক্ষী ও দলিলাদি হাজির করিবারইত্যাদি পদ্ধতির বিষয় বর্ণনা করে। এই আইনকে কার্যকরী করার জন্য বিধিমালাপ্রণয়নের বিধান এই আইনে রয়েছে। এই আইনটি রেজিষ্ট্রি দ্বারা দলিলের সত্যতাসম্পর্কে মানুষের মনে বিশ্বাস জন্মায়।

 

রেজিষ্ট্রেশন আইনের উদ্দেশ্যঃ

গুরুত্বপূর্ণ বিষয়-সম্পত্তি সম্পর্কিতস্বত্ত্বের জার দলিল প্রণয়নের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ সৃষ্টি করা এবং দলিলেরযথার্থতা সম্পর্কে চূড়ান্ত নিশ্চয়তা বিধান করাই রেজিষ্ট্রেশন আইনেরউদ্দেশ্য। জালদলিল ও মিথ্যা স্বাক্ষী দ্বারা সমর্থিত মিথ্যা দাবির উপরপ্রতিষ্ঠিত এরূপ সম্পত্তি বিষয়ক মামলা প্রতিরোধ করবার অভিপ্রায়েই এই আইনেরসৃষ্টি হয়েছে। রেজিষ্ট্রীকরণের অন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্দেশ্য হইল, স্থাবর-সম্পত্তির ক্রেতাদের স্বত্ত্বের অবস্থা নির্ণয়ের অবলম্বন প্রদানকরা। রেজিষ্ট্রীকরণের উদ্দেশ্য হইল-স্বত্ত্বের নিশ্চয়তা প্রদান করা ওজাল-জালিয়াতি ও গোপনীয় আদান-প্রদান প্রতিরোধ করা এবং একটি সম্পত্তিতে একজনব্যক্তির এরূপভাবে অর্জিত স্বত্ত্ব পরাভূত করা। রেজিষ্ট্রীকরণ পদ্ধতিস্বত্ত্বের নিশ্চয়তা প্রদান করছে। কারণ মূল দলিল হারিয়ে গেলে বা বিনষ্টহলেও স্বত্ত্ব হায়ায় না বা নিবষ্ট হয় না। রেজিষ্ট্রীকরণ আই স্বত্ত্ব প্রমাণকরবোর সুযোগের বিধান রেখেছে। রেজিষ্ট্রেশন আইন কর্তৃক দলিলের রেজিষ্ট্রীবাধ্যতামূলক করেছে। রেজিষ্ট্রীযোগ্য দলিল রেজিষ্ট্রী ব্যতীত বৈধ নয়, এরূপদলিলের বৈধতা নির্ধারণের প্রয়োজনে বা সাক্ষ্যে গ্রহণযোগ্যতা আণয়নের জন্যরেজিষ্ট্রীর আবশ্যক হয় না। একই সম্পত্তি সম্পর্কিত একটি রেজিষ্ট্রীকৃত এবংঅন্যটি রেজিষ্ট্রীবিহীন দলিলের মধ্যে প্রতিযোগিতার ক্ষেত্রে প্রথমটিইশক্তিশালী হয়। তেমনি রেজিষ্ট্রীকৃত উইল ব্যতীত অন্য সকল প্রকারস্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি সম্পর্কিত দলিল ঐ সম্পত্তি বিষয়ক অপর কোন মৌখিকচুক্তি বা ঘোষণা অগ্রাহ্য করে বলবৎ হবে। শুধুমাত্র যে সকল ক্ষেত্রে মৌখিকচুক্তির সঙ্গে সঙ্গে বা অব্যাবহিত পরেই সম্পত্তির দখল হস্তান্তরিত হয়, সেক্ষেত্রে এইরূপ ব্যবস্থা প্রচলিত বিধান অনুসারে আইনানুগ হবে। আইন আরো বিধানকরেছে যে, একটি দলিল অবশ্যই রেজিষ্ট্রীকরণের জন্য যথাযথ রেজিষ্ট্রী অফিসেএবং সম্পাদনের তারিখ হইতে নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে দাখিল করতে হবে। ইহারপর প্রথমতঃ রেজিষ্ট্রারী কর্মকর্তাকে অনুসন্ধান ও নির্ণয় করতে হয় যে, প্রশেড়বাক্ত দলিল সম্পর্কে আইনের বিধানাবলী প্রতিপালিত হয়েছে কিন, এবংদ্বিতীয়তঃ দলিলটি সম্পাদিত হয়েছে কিনা। যদি এই দুইটি বিষয়ে, তিনি সন্তুষ্টহন, তবে তিনি দলিলটি গ্রহণ করে সঠিক বহি বাবালামে নকল করাবেন এবং দলিলেতাঁর অফিসের মোহরাঙ্কিত এবং তাঁর স্বাক্ষর যুক্ত পূর্বক তা রেজিষ্ট্রী করাহয়েছে এই প্রত্যায়ন প্রদান করে দাখিলকারক বা তাহার প্রতিনিধিকে দলিলটি ফেরতদিবেন। উইল ব্যতীত স্তাবর সম্পত্তি বিষয়ক দলিলের বহি বা বালামসর্ব-সাধারণের পরিদর্শনের জন্য উন্মুক্ত। সংক্ষেপে উপরোক্ত বিষয়াবলীরেজিষ্ট্রীকরণ আইনের প্রধান প্রধান বিধান। রেজিষ্ট্রীকৃত

দলিলের মাধ্যমেই স্থাবর সম্পত্তিরআদান প্রদান কার্যকর হবে। এই আইনে এমন কোন বিধান সৃষ্টি করে নাই। যাহাপ্রয়োজন হচ্ছে-স্থাবর-সম্পত্তি বিষয়ক কতক দলিল অবশ্রই রেজিষ্ট্রী করতে হবেএবং সর্বসাধারণের পরিদর্শনের জন্য উন্মুক্ত একটি রেজিষ্টারে এরূপরেজিষ্ট্রীকৃত দলিলসমূহ নকল করে রাখতে হবে। উপরোক্ত আলোচনা হতেরেজিষ্ট্রেশন আইনের উদ্দেশ্য সম্পর্কে একটি স্পষ্ট ধারণা পাওয়া সম্ভব-যাহারসার-সংক্ষেপ এরূপঃ

(১) দলিলের যথার্থতা সম্পর্কে চূড়ান্ত নিশ্চয়তা বিধান করা;

(২) আদান-প্রদানের প্রচার প্রদান করা;

(৩) জাল-জালিযাতি প্রতিরোধ করা;

(৪) একটি সম্পত্তির ইতিপূর্বে কোন বিধি-ব্যবস্থা হয়েছে কিনা উহা নির্ণয়ের সুযোগ প্রদান করা; এবং

(৫) স্বত্ব-দলিলের নিরাপত্তা বিধান করা এবং মূল দলিল হারিয়ে গেলে বা নষ্ট হয়ে গেলে সে ক্ষেত্রে স্বত্ব প্রমাণের সুযোগ বিধান করা।

রেজিষ্ট্রেশন আইন সৃষ্টির এইউদ্দেশ্যসমূহ যদি যথাযথভাবে উপলব্ধি করা সম্ভব হয়, তবে আইন প্রণয়নের দুইশতাব্দী কাল পরেও রেজিষ্ট্রেশন আইন আজ যে বিকশিত অবস্থায় আছে, সেই অবস্থায়উহা সঠিকভাবে অনুসরণ করলে, আইন সম্পর্কে আগ্রহী ব্যক্তিদের নিকট এই আইনেরবিভিনড়ব ধারার তাৎপর্য স্পষ্টভাবেই প্রতিভাত হবে।

 

রেজিষ্ট্রেশন আইনের ক্রম বিকাশঃ

১৭৮১ খৃষ্টাব্দে তৃতীয় জর্জের আমলেরেজিষ্ট্রেশন আইন সর্বপ্রথম বঙ্গীয় বিধিবদ্ধ আইন নামে প্রাদেশিক আইন হিসেবেজন্মলাভ করে। উক্ত আইনের ১৪ ধারার প্রদত্ত ক্ষমতাবলে ত্রিবিধ ক্ষমতা নিযেযথা- দলিল, রেজিষ্ট্রীকরণ, জরীপকরণ ও নামজারীকরণের প্রথম রেজিষ্ট্রার মিঃএডওয়ার্ড টিরেটা নিয়োগ লাভ করেন। পরবতৃীকালে ইংরেজ শাসকদের স্বার্থেসংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে বিস্তারিত আইন প্রণয়ন ও উক্ত ত্রিবিধ ক্ষমতা পৃথকীকরণেরতাগিদে ১লা মে, ১৭৯৩ খৃষ্টাব্দে প্রণীত আইন পূর্ববর্তী আইনের সাথে সঙযোজিতহয়। ১৭৯৩ খৃষ্টাব্দেই সর্বপ্রথম হিন্দুদের ‘দত্তক’ গ্রহণ ও সম্পত্তি উইলকরার বিধান প্রণয়ন করা হয়। এই আইনের আওতায় সর্বপ্রথম কলকাতার বাইরে ঢাকা, মুর্শিদাবাদ ও পাটনায় তিনটি পৃথক রেজিষ্ট্রী অফিস স্থাপন করা হয় এবংঅফিসগুলোর তত্ত্বাবধানের দায়িত্ব প্রদান করা হয় দেওয়ানী আদালতেররেজিষ্ট্রার এর উপর। প্রকৃতপক্ষে এই আইনের বিধানসমূহ রাণী এ্যানেররাজত্বকালে ইয়র্ক শ্যায়ারের রেজিষ্ট্রেশন আইনের অনুকরণে প্রণীত হয়।পরবর্তীকালে ১৭৯৩ সালের বিধানাবলীকে সমৃদ্ধ, স্বয়ংসম্পূর্ণ ও সময়োপযোগীকরার জন্য বিভিনড়ব সময নতুন আইনের সংযোজন ও পুরাতনের সংশোধন করা হয। তখনইকাজিউল কাজ্জাত (Head Kazi of Bengal) -এর পদ সৃষ্টি করে বাংলা, বিহার ওঊড়িষ্যার বেশ কিছু সংখ্যক জেলায় নিয়োগ করে তাঁদের অধিক্ষেত্রভূক্তি দলিলাদিসংরক্ষণ ও অনুলিপি সরবরাহ করার দায়িত্ব প্রদান করা হয়। ১৭৯৩ সালেরসামগ্রিক বিধানাবলী ১৮০৩ সালে পুনরায় বিধিকরণ করে সাধারণ আইনের অন্তর্ভূক্তকরা হয় যা ১৮০৫ সালে ঊড়িষ্যার কটক অবধি বিস্তৃতিলাভ করে। ১৮৩৮ সালেসর্বপ্রথম উপ-রেজিষ্ট্রার (Suv- Registrar) -এর অফিস প্রতিষ্ঠার আইন প্রণয়নকরা হয়। ১৮৪৩ সালে প্রণীত আইনের দ্বারা রেজিষ্ট্রীকৃত দলিলসমূহকেঅরেজিষ্ট্রীকৃত (Un-Registered) দলিলাদির তুলনায় অগ্রাধিকার দেয়ার সুস্পষ্টবিধান রাখা হয়। এরপর ১৮৪৭, ১৮৫১, ১৮৫৬, ১৮৫৯ সালে রেজিষ্ট্রেশন আইনেরধারাবাহিকতা বজায় রেখে বিভিনড়ব ক্ষেত্রে সময়োপযোগী করে

সংশোধন করা হয়। এরপর ১৮৬৪ Act XVI সালে দ্বারা সর্বপ্রথম ১৭৯৩ সালের প্রাদেশিক বিধানাবলীকে বাতিল করে General Registration Act প্রণয়নকরত ১লা জানুয়ারী, ১৮৬৫ সাল হতে কার্যকর করা হয়।১৯৬৬ সালে সংযোজিত নতুন আইন দ্বারা রেজিষ্ট্রেশন পদ্ধতির এক আমূল পরিবর্তনকরে দলিল দাখিল করার বিধান প্রবর্তন করা হয়। পরবর্তীতে ১৮৭১ সালে Registrar General -এর পদ বাতির করে নতুন ও বর্ধিত দায়িত্ব দিয়ে Inspector General of Registration -এর পদ সৃষ্টি করা হয়। এভাবে ১৮৬৫, ১৮৬৬,১৮৬৮, ১৮৭১, ১৮৭৭, ১৮৭৯, ১৮৮৩, ১৮৮৬, ১৮৮৮, ১৮৮৯, ১৮৯১ ও ১৮৯৯ সালে বিভিনড়ব আইন প্রণয়ন করেমূল আইনের পরিবর্তন ও পরিবর্ধন করে যুগের চাহিদা মেটানো হয়। সর্বশেষ ১৯০৮সালে পূর্বের সকল বিক্ষিপ্ত আইন ও বিধানগুলোকে সংকলিত করে বর্তমানরেজিষ্ট্রেশন আইন Act XVI প্রণয়ন করা হয়।